Wednesday, December 13, 2017

// // Leave a Comment

কাসীদায়ে শাহ্ নিয়ামতউল্লাহ কাশ্মীরি (রহঃ)

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’’
১. পশ্চাতে রেখে এই ভারতের অতীত কাহিনী যত
আগামী দিনের সংবাদ কিছু বলে যাই অবিরত।
২.দ্বিতীয় দাওরে হুকুমত হবে তুর্কি মুগলদের
কিন্তু শাসন হইবে তাদের অবিচার যুলুমের।

৩. ভোগে ও বিলাসে আমোদে-প্রমোদে মত্ত থাকিবে তারা
হারিয়ে ফেলিবে স্বকীয় মহিমা তুর্কি স্বভাব ধারা।
৪. তাদের হারায়ে ভীনদেশী হবে শাসন দন্ডধারী
জাঁকিয়া বসিবে, নিজ নামে তারা মুদ্রা করিবে জারি।
৫. এরপর হবে রাশিয়া-জাপানে ঘোরতর এক রণ
রুশকে হারিয়ে এ রণে বিজয়ী হইবে জাপানীগণ।
৬.শেষে দেশ-সীমা নিবে ঠিক করে মিলিয়া উভয় দল
চুক্তিও হবে, কিন্তু তাদের অন্তরে রবে ছল।
৭. ভারতে তখন দেখা দিবে প্লেগ আকালিক দুর্যোগ
মারা যাবে তাতে বহু মুসলিম হবে মহাদুর্ভোগ।
৮. এর পর পরই ভয়াবহ এক ভূ-কম্পনের ফলে
জাপানের এক-তৃতীয় অংশ যাবে হায় রসাতলে।
৯. পশ্চিমে হবে চার সালব্যাপী ঘোরতর মহারণ
প্রতারণাবলে হারাবে এ’রণে “জীম” কে “আলিফ” গণ।
১০. এ সমর হবে বহু দেশ জুড়ে অতিব ভয়ঙ্কর
নিহত হইবে এতে এক কোটি ত্রিশ লাখ নারী-নর।
১১.অতঃপর হবে রণ বন্ধের চুক্তি উভয় দেশে
কিন্তু তা’ হবে ক্ষণভঙ্গুর টিকিবে না অবশেষে।
১২. নীরবে চলিবে মহাসমরের প্রস্তুতি বেশুমার
‘জীম’ ও ‘আলিফে’ খন্ড লড়াই ঘটিবে বারংবার।
১৩. চীন ও জাপান দু’দেশ যখন লিপ্ত থাকিবে রণে
নাসারা তখন রণ প্রস্তুতি চালাবে সঙ্গোপনে।
১৪.প্রথম মহাসমরের শেষে একুশ বছর পর
শুরু হবে ফের আরো ভয়াবহ দ্বিতীয় মহাসমর।
১৫. হিন্দবাসী এই সমরে যদিও সহায়তা দিয়ে যাবে
তার থেকে তারা প্রার্থিত কোন সুফল নাহিকো পাবে।
১৬. বিজ্ঞানীগণ এ লড়াইকালে অতিশয় আধুনিক
করিবে তৈয়ার অতি ভয়াবহ হাতিয়ার আণবিক।
১৭. গায়বী ধ্বনির যন্ত্র বানাবে নিকটে আসিবে দূর
প্রাচ্যে বসেও শুনিতে পাইবে প্রতীচীর গান-সুর।
১৮.মিলিত হইয়া ‘প্রথম আলিফে’ ‘দ্বিতীয় আলিফ’ দ্বয়
গড়িয়া তুলিবে রুশ-চীন সাথে আঁতাত সুনিশ্চয়।
১৯.ঝাঁপিয়ে পড়িবে ‘তৃতীয় আলিফ’ এবং ‘দু’জীম’ ঘাড়ে
ছুড়িয়া মারিবে গযবী পাহাড় আণবিক হাতিয়ারে।
অতি ভয়াবহ নিষ্ঠুরতম ধ্বংসযজ্ঞ শেষে
প্রতারণাবলে প্রথম পক্ষ দাঁড়াবে বিজয়ী বেশে।
২০. জগত জুড়িয়া ছয় সালব্যাপি এই রণে ভয়াবহ
হালাক হইবে অগনিত লোক ধন ও সম্পদসহ।
২১.মহাধ্বংসের এ মহাসমর অবসানে অবশেষে
নাসারা শাসক ভারত ছাড়িয়া চলে যাবে নিজ দেশে।
কিন্তু তাহারা চিরকাল তরে এদেশবাসির মনে
মহাক্ষতিকর বিষাক্ত বীজ বুনে যাবে সেই সনে।
২২. ভারত ভাঙ্গিয়া হইবে দু’ভাগ শঠতায় নেতাদের
মহাদুর্ভোগ-দুর্দশা হবে দু’দেশেরি মানুষের।
২৩. মুকুটবিহীন নাদান বাদশা পাইবে শাসনভার
কানুন ও তার ফরমান হবে আজেবাজে একছার।
২৪.দূর্নীতি –ঘুষ, কাজে অবহেলা নীতিহীনতার ফলে
শাহী ফরমান হবে পয়মাল দেশ যাবে রসাতলে।
২৫.হায় আফসোস করিবেন যত আলেম ও জ্ঞানীগণ
মূর্খ বেকুফ নাদান লোকেরা করিবে আস্ফালন।
২৬.পেয়ারা নবীর উম্মতগণ ভুলিবে আপন শান
ঘোরতর পাপ–পঙ্কিলতায় ডুবিবে মুসলমান।
২৭.কালের চক্রে স্নেহ তমীযের ঘটিবে যে অবসান
লুন্ঠিত হবে মানী লোকদের ইযযত সম্মান।
২৮.পশুর অধম হইবে তাহারা ভাই –বোন, মা –বেটায়
জেনা –ব্যাভিচারে হইবে লিপ্ত পিতা আর কন্যায়।
২৯.উঠিয়া যাইবে বাছ ও বিচার হালাল ও হারামের
লজ্জ্বা রবে না, লুন্ঠিত হবে ইযযত নারীদের
৩০.নগ্নতা আর অশ্লীলতায় ভরে যাবে সব গেহ
নারীরা উপরে সেজে রবে সতী ভেতরে বেচিবে দেহ।
৩১.উপরে সাধুর লেবাস ভেতরে পাপের বেসাতি পুরা
নারীদেহ নিয়ে চালাবে ব্যবসা ইবলিস–বন্ধুরা।
৩২.নামায ও রোযা, হজ্জ্ব–যাকাতের কমে যাবে আগ্রহ
ধর্মের কাজ মনে হবে বোঝা–দারুণ দূর্বিষহ।
৩৩.কলিজার খুন পান করে বলি শোন হে বৎসগণ
খোদার ওয়াস্তে ভুলে যাও সব নাসারার আচরণ।
৩৪.পশ্চিমা ঐ অশ্লীলতা ও নগ্নতা বেহায়ামি
ডোবাবে তোদের, খোদার কঠোর গযব আসিবে নামি।
৩৫.ধ্বংস, নিহত হবে মুসলিম বিধর্মীদের হাতে
হবে নাজেহাল, ছেড়ে যাবে দেশ ভাসিবে রক্তপাতে।
৩৬.মুসলমানদের জান মাল হবে খেলনা–মূল্যাহত
রক্ত তাদের প্রবাহিত হবে সাগর স্রোতের মত।
৩৭.এরপর যাবে ভেগে নারকীরা পাঞ্জাব কেন্দ্রের
ধন–সম্পদ আসিবে তাদের দখলে মুমিনদের।
৩৮.অনুরূপ হবে পতন একটি শহর মুমিনদের
তাহাদের ধন–সম্পদ যাবে দখলে হিন্দুদের।
৩৯.হত্যা, ধংসযজ্ঞ সেখানে চালাইবে তারা ভারি
ঘরে ঘরে হবে ঘোর কারবালা ক্রন্দন আহাজারি
৪০.মুসলিম নেতা –অথচ বন্ধু কাফেরের তলে তলে
মদদ করিবে ওদেরকে সে এক পাপ চুক্তির ছলে।
৪১.প্রথমে তাহার ‘শীন’ অক্ষর থাকিবে বিদ্যমান
এবং শেষেতে ‘নূন’ অক্ষর রহিবে বিরাজমান
ঘটিবে তখন এসব ঘটনা মাঝখানে দু’ঈদের
ধিক্কার দিবে বিশ্বের লোক যালিম হিন্দুদের।
৪২.মুহররম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবে মুমিনগণ
ঝঞ্ঝার বেগে করিবে তাহারা পাল্টা আক্রমণ।
৪৩.সৃস্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া প্রচন্ড আলোড়ন
‘উসমান’ এসে নিবে জিহাদের বজ্র কঠিন পণ।
৪৪. ‘সাহেবে কিরান’-হাবিবুল্লাহ হাতে নিবে শমসের
খোদায়ী মদদে ঝাঁপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধের।
৪৫. কাঁপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর গাযীদের পদভারে
ভারতের পানে আগাইবে তাঁরা মহারণ হুঙ্কারে।
৪৬. পঙ্গপালের মত ধেয়ে এসে এসব ‘গাযীয়ে-দীন
যুদ্ধে জিতিয়া বিজয় ঝান্ডা করিবেন উড্ডীন।
৪৭. মিলে একসাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী ও আফগান
বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবে হিন্দুস্তান।
৪৮. বরবাদ করে দেয়া হবে দীন ঈমানের দুশমন
অঝোর ধারায় হবে আল্লাহর রহমত বরিষণ।
৪৯. দীনের বৈরী আছিল শুরুতে ছয় হরফেতে নাম
প্রথম হরফ “গাফ’ সে কবুল করিবে দীন ইসলাম।
৫০. আল্লাহর খাস রহমতে হবে মুমিনেরা খোশদিল
হিন্দু রসুম রেওয়াজ এ ভূমে থাকিবে না একতিল।
৫১. ভারতের মত পশ্চিমাদেরো ঘটিবে বিপর্যয়
তৃ্তীয় বিশ্ব সমর সেখানে ঘটাইবে মহালয়।
৫২. এই রণে হবে ‘আলিফ’ এরূপ পয়মাল মিসমার
মুছে যাবে দেশ, ইতিহাসে শুধু নামটি থাকিবে তার।
৫৩. যত অপরাধ তিল তিল করে জমেছে খাতায় তার
শাস্তি উহার ভুগতেই হবে নাই নাই নিস্তার।
কুদরতি হাতে কঠিন দন্ড দেয়া হবে তাহাদের
ধরা বুকে শির তুলিয়া নাসারা দাঁড়াবে না কভু ফের।
৫৪. যেই বেঈমান দুনিয়া ধংস করিল আপন কামে
নিপতিত হবে শেষকালে সেই নিজেই জাহান্নামে।
৫৫. রহস্যভেদী যে রতন হার গাঁথিলাম আমি তা-যে
গায়বী মদদ লভিতে, আসিবে উস্তাদসম কাজে।
৫৬. অতিসত্ত্বর যদি আল্লা’র মদদ পাইতে চাও
তাঁহার হুকুম তামিলের কাজে নিজকে বিলিয়ে দাও।
৫৭. ‘কানা যাহুকার’ প্রকাশ ঘটার সালেই প্রতিশ্রুত
ইমাম মাহদী দুনিয়ার বুকে হবেন আবির্ভূত।
৫৮. চুপ হয়ে যাও, ওহে ‘নিয়ামত’ এগিয়ো না মোটে আর
ফাঁস করিও না খোদার গায়বী রহস্য-আসরার।
এ কাসীদা বলা করিলাম শেষ ‘কুনতু কানযান’ সালে
অদ্ভুত এই রহস্য গাঁথা ফলিতেছে কালে কালে।
(কাসীদা সওগাত, কৃত-মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান, বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন।)

0 Comments:

Post a Comment