Showing posts with label ইসলামিক কনটেন্ট. Show all posts
Showing posts with label ইসলামিক কনটেন্ট. Show all posts

Wednesday, May 31, 2023

// // Leave a Comment

রূহানী সাধকরাই দুনিয়ার নেপথ্য শাসক



***রূহানী সাধকরাই দুনিয়ার নেপথ্য শাসক***
          - লিখেছেন খালেদ সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী।
শরীয়ত-তরিকতের মাশায়েখ উলামাকে নানা শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। বর্তমান যুগে প্রচলিত আধুনিক ও প্রাচীন পদ্ধতির আরবি মাদ্রাসা শিক্ষিতদের মধ্যে সকল শ্রেণীর আলেম-ফাজেল অন্তর্ভুক্ত, যাদের মধ্যে রয়েছেন কোরআনের তফসীরবিদ, হাদীস শাস্ত্রবিদ, ফিক্হবিদ এবং তাসাওফ শাস্ত্রবিদ প্রভৃতি। এদের মধ্যে তাসাওফবিদ বা, সুফী সাধক, আওলিয়া-মাশায়েখের উচ্চ মর্যাদার বিশেষ পদবীধারীদের প্রসঙ্গ এ আলোচনার বিষয়বস্তু। আওলিয়া-মাশায়েখ ও সুফিয়ায়ে কেরামের পরিভাষায় বিশেষ পদবীধারী আধ্যাত্মিক সাধকদের পরিচয় তাসাওফ শাস্ত্রে প্রচলিত হলেও সচরাচর তাদের দৃশ্য জগতে দেখা যায় না, তবে তাদের কারো কারো আধ্যাত্মিক শক্তি, অলৌকিক ক্ষমতার কথা জানা যায়। যেমন বলা হয়, গাওস কুতুব, আব্দাল প্রভৃতি।

‘তাসাউফ’ বা, সুফিশাস্ত্রে অসংখ্য পরিভাষা প্রচলিত। সকলের নিকট তা সহজ বোধগম্য নয়। বিভিন্ন বিষয়েরও নানা শ্রেণী রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আওলিয়ায়ে কেরামের শ্রেণী বিভাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে আওলিয়া ভক্ত-অনুসারী যারা, তারা ছাড়াও বিশেষভাবে আলেম সমাজের নিকট আওলিয়ার শ্রেণী বিভাগ অবগত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

সুফিয়ায়ে কেরামের পরিভাষায় এরূপ আওলিয়ায়কে বারো শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে, যা এইঃ ‘আকতাব, গাওস, ইমামাইন, আওতাদ, আবদাল, আখইয়ার, আবরার, নোকাবা, নোজাবা, আমদ, মকতুবান, মোফরাদ।’ এসব মহান ব্যক্তিত্বের পরিচয়:
আকতাব: কুতুবের বহুবচন। কুতুবে আলম বা বিশ্ব কুতুব একজন হয়ে থাকেন।
এর আরো কয়েকটি নাম যথাঃ কুতুবে আকবর, কুতুবুল এরশাদ, কুতুবুল আকতাব ও কুতুবুল মাদার। গায়েবী জগতে তার নাম আবদুল্লাহ। তার দুই জন উজির হয়ে থাকেন, তাদের ডানের উজিরের নাম আবদুল মালেক এবং বামের উজিরের নাম আবদুল রব। এ দুই জন ইমামাইন নামে পরিচিত। বর্ণিত গণ ব্যতীত আরো বারো জন কুতুব হয়ে থাকেন।

তাদের মধ্যে সাতজন দুনিয়ার সাতটি অঞ্চলে বাস করেন এবং তাদেরকে বলা হয় ‘কুতুবে একলেমী’ বা আঞ্চলিক কুতুব। বাকি পাঁচজন অবস্থান করেন ইয়েমেনে। তারা ‘কুতুবে বেলায়েত’ নামে খ্যাত। এটি কুতুবদের সংখ্যা, তবে অনির্দিষ্ট কুতুব একজন করে প্রত্যেক শহরে এবং প্রত্যেক গ্রামে হয়ে থাকেন।

গাওসঃ একজনই গাওস হয়ে থাকেন। কেউ কেউ কুতুবুল আকতাবকেই গাওস বলেছেন। কেউ তাকে ভিন্ন বলেছেন এবং তিনি মক্কায় থাকেন। এতে কারো কারো মতভেদ রয়েছে।

আওতাদঃ দুনিয়ার চার কোণে অবস্থানকারী চারজনের নাম আওতাদ। এদেরকে বলা হয় ‘রোকন’ বা স্তম্ভ।
আবদাল : এদের সংখ্যা চল্লিশজন। বাইশ অথবা বারোজন সিরিয়ায় অবস্থান করেন এবং আঠারো বা আঠাইশজন ইরাকে থাকেন।

আখইয়ারঃ এদের সংখ্যা পাঁচশ’ বা সাতশ। তারা এক স্থানে অবস্থান করেন না, নানা স্থানে ঘুরে বেড়ান পর্যটকের ন্যায়। তাদের নাম হয় হোসাইন।
আবরারঃ অধিকাংশের মতে আবদালকে আবরার বলা হয়।

নোকাবাঃ এরা সংখ্যায় তিনশ’ এবং সবাই আরব দেশে থাকেন। এদের সকলের নাম আলী।
নোজাবাঃ এদের সংখ্যা সত্তরজন এবং সবাই মিসরে থাকেন এবং সকলের নাম হাসান।
আমদঃ চারজন আমদ হয়ে থাকেন দুনিয়ার চারদিকে অবস্থান করেন এবং সকলের নাম মোহাম্মদ।
ফর্দঃ গাওসের স্তর উন্নীত হয়ে ফর্দে পরিণত হয় এবং আরো উন্নীত হয়ে কুতুবে ওয়াহদাত হয়।

মকতুমঃ মকতুম একই অবস্থায় সব স্থানেই থাকেন। (হজরত থানভী (রহ:) কৃত তালীমুদ্দীন)
এ রূহানী মণীষীগণ সাধারণ লোকের অগোচরে থাকলেও প্রকৃত সাধকগণ তাদেরকে চেনেন। তাদের অবর্তমানে অন্যরা যথার্থভাবে তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে থাকেন এবং বলা হয়ে থাকে, এ রূহানী সাধকরাই প্রকৃতপক্ষে দুনিয়ার নেপথ্য চালিকা শক্তি হিসেবে বিরাজ করে থাকেন।
***
কার্টেসীঃ দৈনিক ইনকিলাব। (১২ মার্চ, ২০২০)

Image by Gerd Altmann from Pixabay
Read More

Thursday, October 27, 2022

// // Leave a Comment

প্রত্যাবর্তন


হযরত আবদুর রহমান হানাফী (রহঃ) যখন আরব সফরে ছিলেন তখন ফরিদপুরের এক লোক জাহাজ যোগে হজ্জ্ব সম্পাদনের জন্য মক্কা শরীফ যান।

হজ্জ্বের পর উনার বাড়ি ফেরার তারিখ তিনি ভুলে গিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে স্টীমার ঘাটে আসতে পারেননি। ফলে জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। পরে হঠাৎ মনে পড়ায় লোকটি জিদ্দা গিয়ে এরপর আবার মক্কা শরীফ ফিরে পাগলপারা হয়ে ঘুরতে থাকেন। তখন হারাম শরীফে একজন বাঙ্গালীর সাথে উনার সব ঘটনা খুলে বলেন। ঐ ব্যক্তি তাকে বলেন যে, মেছফালাহ-তে একজন বাঙ্গালী কামেল অলী আছেন, উনার নিকটে গিয়ে বলে দেখো- কোনো ব্যবস্থা হয় কিনা।

ঠিকানামত ফরিদপুরের লোকটি গিয়ে দেখেন সোনাকান্দার পীর আবদুর রহমান হানাফী (রহঃ) মোরাকাবায় বসে আছেন। দীর্ঘ সময় বসার পর তিনি চলে আসেন। এভাবে তিনদিন পীর সাহেবকে এ অবস্থায় পান এবং তৃতীয় দিন দীর্ঘসময় অপেক্ষা করার পর পীর সাহেব হুজরা থেকে বের হলে লোকটি প্রাণ খুলে সব কথা বলেন। হুজুর তাকে বললেন, তুমি এ বছর আমার সঙ্গে থাকো; থাকা ও খাবার পয়সা কিছুই লাগবে না। আগামী বছর হজ্জ্ব করে দেশে যাবার সব ব্যবস্থা ইনশাআল্লাহ্‌ আমি করে দেব। এতে লোকটি কিছুতেই রাজি হলো না বরং বাড়ি যাবার জন্যে কান্নাকাটি শুরু করে দিল; কেননা বাড়িতে ছোট-ছেলে মেয়ে, স্ত্রী ও মা রয়েছেন। তাঁদের দেখাশোনা ও লালন-পালনের আর কেউ নেই।

এরপর পীর আবদুর রহমান হানাফী (রহঃ) লোকটি কে বললেন, আমার রুমে মোমবাতি আছে, অন্ধকার ঘরে বসে আলাপ করতে কেমন লাগে; নাও, এ মোমবাতিটি জ্বালিয়ে নিয়ে এসো। আমার কাছে দিয়াশলাই নেই, লোকটি বললো, হুজুর আগুন কোথায় পাবো? পীর সাহেব হুজুর বললেন, দেখোতো, ঐ দূরে কে যেন একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। লোকটি দেখে বললো, হ্যাঁ, তাইতো। তখন লোকটি হুজুরের হাত থেকে খালি মোমবাতিটি নিয়ে জ্বালানোর জন্যে দ্রুত ঐ মোমবাতিওয়ালার পিছনে দৌঁড়াতে লাগলো। কিন্তু যত দ্রুত দৌঁড়ায় কোন অবস্থায়ই বাতিটির কাছে পৌঁছাতে পারেনা।

এভাবে বাতিটির পিছনে পিছনে দ্রুত দৌঁড়াতে থাকে আর বাতিটিও পিছাতে থাকে; হঠাৎ ঐ ব্যক্তি দেখে সামনের বাতিটি নিভে গেছে। সেও বেঁহুশ হয়ে পড়ে যায়। এমন সময় ঐ হাজী সাহেবের মা চিৎকার করে বলতে থাকেন যে, তোমরা কে কোথায় আছো- জলদি এসো, আমার ছেলেতো মক্কা শরীফ হতে বাড়িতে চলে এসেছে। সবাই এসে আশ্চর্যান্বিত হয়ে ব্যাপার জিজ্ঞেস করলে লোকটি ঘটনাটি সবাইকে খুলে বলেন।

- সোনাকান্দার মাটি। (পৃষ্ঠাঃ ৮৪-৮৫) লেখকঃ মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান।

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা উনার ওলীদের মতো আমাদেরকেও প্রিয়পাত্র করে নিন। আমীন।

***
Image Courtesy: https://pixabay.com/photos/way-sign-travel-landscape-nature-1767419/  


Read More

Thursday, February 20, 2020

// // 2 comments

অণুপ্রেরণায় পবিত্র কোরআন শরীফের ১০ আয়াত

 জীবনে অনেক সময় আমরা নানা কারণে হতাশ হই।তখন উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। নিজেকে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ মনে হয় তখন।
ওই মুহূর্তে আমরা এমন আশ্রয় খুঁজি, যার কাছে আমরা পেতে পারি সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।
Read More

Sunday, February 16, 2020

// // Leave a Comment

ইসলামে যাদুর বিধান

 যাদু চর্চা করা কুফুরি। যাদু শিক্ষা করা এবং শিক্ষা দেওয়া উভয়ই হারাম।
যাদুকরদের শাস্তির দায়িত্ব রাষ্ট্রপ্রধানের; জনগণের নয়।
আর, যদি যাদুকর যাদু বিদ্যা ত্যাগ করে তওবা করার ইচ্ছা করে,
Read More

Sunday, January 26, 2020

// // Leave a Comment

হযরত ওয়াইস্ ক্করণী (রহঃ) এর নসীহত

 হযরত ওয়াইস্ ক্করণী (রহঃ) বলিয়াছেন, 
* যে ব্যক্তি খোদাকে চিনিয়াছে, তাঁহার নিকট কোন কিছুই গোপন থাকে না। 
* নির্জনতা অবলম্বনেই শান্তি।
* অন্য চিন্তা মনে স্থান না পাইলেই তাওহীদের জ্ঞান লাভ হয়।
* একাকী থাকা উচিত নয়।
Read More
// // Leave a Comment

বর্তমান ঘটনাপ্রবাহঃ হযরত শাহ্‌ নিয়ামতউল্লাহ্‌ কাশ্মীরি (রহঃ) এর ভবিষৎবাণী অনুযায়ী

 * মুকুটবিহীন অযোগ্য বাদশাহ্‌গণ রাজত্ব করিবে। তাহারা অনেক আইন-কানুন জারি করিবে। কিন্তু সমস্তই অযোগ্য হইবে।
* ঘুষ এবং অলসতার কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারী কাজকর্ম সময়মত হইবে না।
Read More
// // Leave a Comment

হযরত হুসায়েন মানসূর হাল্লাজ (রহঃ)

 হযরত হুসায়েন মানসূর হাল্লাজ (রহঃ) তরঙ্গবিশিষ্ট প্রেম নদীর দুঃসাহসী ডুবুরী ও সত্যের অরণ্যে সিংহস্বরূপ ছিলেন। আল্লাহ্‌ পাকের রাস্তায় নানা ক্লেশ ও যন্ত্রণা ভোগ করিয়া তিনি নিহত হন। তাঁহার জীবনে নানা অদ্ভূত ও অত্যাশ্চর্য ঘটনাবলী ঘটিয়াছে।
Read More
// // Leave a Comment

বিস্ময়কর কারামত

 "হাল্লাজ" শব্দের অর্থ হইল ধুনকর। কথিত আছে, হযরত মানসূর (রহঃ) একবার এক ব্যক্তির কার্পাস তুলার স্তুপের নিকট দিয়া যাইতেছিলেন।
Read More

Friday, August 2, 2019

// // 1 comment

সত্যপথ প্রাপ্তি

 হযরত ইবরাহীম আদ্‌হাম (রহঃ) ছিলেন বলখের প্রতাপশালী বাদশাহ্‌। এক বিশাল রাজ্য ছিল তাঁহার শাসনাধীন। তিনি যখন ভ্রমণে বাহির হইতেন, তখন ৪০ জন করিয়া স্বর্ণের ঢাল ও রৌপ্যের গুর্জধারী সৈন্য তাঁহার অগ্রে ও পশ্চাতে তাঁহার দেহরক্ষীরূপে মোতায়েন থাকিত। 
একদা শাহী মহলে গভীর রাত্রে
Read More
// // Leave a Comment

অত্যাচারী এক বাদশাহের গল্প

 একাদশ শতাব্দীর প্রথমে অত্যাচারী ইসলাম বিরোধী সম্রাট আকবরের যুগে হযরত শায়েখ আহ্‌মাদ মোজাদ্দেদে আলফে সানী (রহঃ) ছিলেন। 
সম্রাট আকবর ইসলাম ধর্মের ভয়াবহ শত্রু হিসাবে দণ্ডায়মান হইয়াছিল।
Read More
// // 1 comment

গান-বাদ্যের কুফল

 পবিত্র কোরআন শরীফে সূরা লোকমানে আছে- "লোকদিগের মধ্যে কোন লোক এরূপ আছে যে, লাহ্‌ওয়াল হাদিছ গ্রহণ করে, যাতে নিখোঁজভাবে লোকদিগকে খোদাতা'আলার রাস্তা হতে পথভ্রষ্ট করতে পারে এবং ইহাকে বিদ্রুপ মনে করে; তাদের জন্য জঘন্যতম শাস্তি আছে। "
Read More
// // Leave a Comment

বাদ্যযন্ত্র সমাচার

 এক রাত্রিতে হযরত বায়েযীদ (রহঃ) কবরস্থানের দিকে যাইতেছেন, এমন সময়ে বস্তাম শহরের কোন নেতৃস্থানীয় লোকের এক যুবক পুত্র বাদ্য-যন্ত্র বাজাইয়া তাহার সম্মুখ দিয়া যাইতেছিল।
Read More
// // Leave a Comment

প্রিয় নবীজী (সা.) দেখতে কেমন ছিলেন

 মুমিন হৃদয়ের একান্ত আশা, যদি সব কিছুর বিনিময়ে হলেও প্রিয়নবী (দ.)কে জীবনে একনজর দেখতে পেতাম! যে নবীজিকে (ঈমানের চোখে) একবার দেখবেন তাকে জাহান্নামের আগুণ স্পর্শ করবে না। (তিরমিাজ।) প্রিয় রাসুল (দ.)-এর পবিত্র আকার-আকৃতি অনেক সাহাবি থেকে বর্ণিত হয়েছে।
Read More
// // Leave a Comment

শাহ নেয়ামাতুল্লাহ রহঃ এর ভবিষ্যৎবাণী ।। বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং গাজওয়াতুল হিন্দ।

 আল্লাহ্ তা‘য়ালা প্রদত্ত ইলহাম এর জ্ঞান দ্বারা আজ থেকে প্রায় সাড়ে আটশত বছর পূর্বে ( হিজরী ৫৪৮ সাল মোতাবেক ১১৫২ সালে খ্রিস্টাব্দে) শাহ নেয়ামতুল্লাহ (রহঃ ) তার বিখ্যাত কাব্যগুলো রচনা করেন। অনেক ওলী আউলিয়া মাশায়েখগণ মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ইলহাম পেয়ে থাকেন।
Read More
// //

পবিত্র মিলাদ ও কিয়াম শরীফ প্রসঙ্গে কিছু কথা


***পবিত্র মিলাদ-কিয়াম শরীফ প্রসঙ্গে কিছু কথা***
"কেন এক মুসলমান আরেক মুসলমানের প্রতি কাদা নিক্ষেপ করছেন??... চার মাযহাবে তো অনেক মাসআলা নিয়ে এখতেলাফ রয়েছে; কিন্তু, কেউ তো আরেক মাযহাব কে ভ্রান্ত বলছেন না; এক মাযহাবে যেটা জায়েয- অন্য মাযহাবে সেটা আরেক দলীলের ভিত্তিতে হারাম বলা হয়েছে; অথচ, দুটিই সঠিক। [আর, মিলাদে কিয়াম শরীফ হারাম নয়; বরং, এটা মুস্তাহাব- মুস্তাহ্সান। অবশ্য, কোরআন শরীফ তিলাওয়াত, দরুদ শরীফ বা, মিলাদ-কিয়াম এবং আযান গান-বাজনা সহকারে হারাম।] চার মাযহাবই পূর্নাঙ্গভাবে সঠিক ও যে কেউ এগুলোর যেকোন একটা অনুসরণ করতে পারেন। চার ইমামের মাঝে তো কোন সময় এভাবে 'কাদা' নিক্ষেপের প্রতিযোগিতা দেখা যায়নি- বরং, উনারা এগুলো থেকে মুক্ত ছিলেন। উনারা উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন।। তাহলে,আমরা কেন একটা মুস্তাহাব- মুস্তাহসান বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করবো?- অথচ- 'ধর্মে কোন বাড়াবাড়ির নিয়ম নেই'। আপনারা অন্য দলীলের ভিত্তিতে মিলাদ-কিয়াম না পালন করলে না করেন; কিন্তু, বাড়াবাড়ি করবেন কেন?... 'গালাগালি করা বা শ্রুতিকটু কথা বলা কোন মু'মিনের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ' হাজী ইমদাদুল্লাহ্‌ মুহাজেরে মক্কী (রহঃ) পর্যন্ত মিলাদ-কিয়াম পালন করে গিয়েছেন- যিনি কওমী এবং আলিয়া- উভয় শ্রেণীর আলেমের নিকটই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি নিষেধ করে গিয়েছিলেন এগুলো নিয়ে যেন কোন প্রকার বাড়াবাড়ি না হয়। আর, মাহফিলে-মিলাদ শরীফে হুজুর পোর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপস্থিত হওয়ার আকীদা প্রসঙ্গে হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী (রহঃ) এর ভাষ্য এরকমঃ "এ ধরণের আকীদাকে কুফর ও শিরক বলাটা বাড়াবাড়ি মাত্র। এটা কুরআন-হাদিস ও যুক্তি- উভয় মতে সম্ভব; এবং অনেক জায়গায় এ ধরণের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার প্রমাণও রয়েছে। যদি কেউ সন্দেহ করে যে, হুজুর (সাঃ) কিভাবে অবগত হবেন এবং একই সাথে কিভাবে কয়েক জায়গায় তাশরীফ নিয়ে যাবেন- তাহলে এটাকে খুবই দুর্বল সন্দেহ বলে ধরে নিতে হবে। হুজুর (সাঃ) এর ইলম ও রুহানিয়াতের বিস্তৃতি সম্পর্কে বিশুদ্ধ রেওয়ায়েত এবং আহলে কাশফের প্রত্যক্ষ দর্শন দ্বারা যা প্রমাণিত- এর সামনে এ ধরণের ধারণা বাতুলতা মাত্র। তা ছাড়া আল্লাহর কুদরতের বেলায় কারো নাক গলাবার অবকাশ নেই। এটাও হতে পারে যে, হুজুর (সাঃ) আপন জায়গায় অবস্থান করবেন এবং মধ্যবর্তী পর্দাটা অপসারিত হয়ে যাবে। যে কোন অবস্থায় এটা সম্ভব। এর দ্বারা হুজুর (সা:) এর ক্ষেত্রে সত্তাগত অদৃশ্য জ্ঞান- যা আল্লাহ্‌ তা'আলার জন্য খাস- সেটাও প্রতিভাত হয় না। সত্তাগত ইলমে গায়েব বা অদৃশ্য জ্ঞান ওটাকে বলা হয়- যেটা অদৃশ্য জ্ঞানীর সত্তার সাথে সম্পৃক্ত; অর্থাৎ, যে সত্তাগতভাবে অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত, যাকে কারো বলে দেয়ার প্রয়োজন হয় না। এ ধরণের অদৃশ্য জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্‌ তা'আলার জন্য খাস। আর, যে জ্ঞান খোদা তা'আলা প্রদত্ত- ওটা সত্তাগত নয়। এ ধরণের জ্ঞান মাখলুকের বেলায় শুধু সম্ভব নয়; বরং এর ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। ইলকা, ইলহাম ও ওহী- এ ধরণের জ্ঞানেরই পর্যায়ভুক্ত। তাই, সম্ভবপর কোন বিষয়ের আকীদা কিভাবে কুফর বা শিরক হতে পারে?" ['ফাসায়েলে হাফতে মাসায়েল'- লেখকঃ 'হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী (রহঃ)' থেকে বঙ্গানুবাদকৃত। ] তৎকালীন সময়ে এ বিষয়ে কথা বলাতে উনাকে নিয়ে অনেকে হাসাহাসি করেছেন, অনেকেই 'পাগল' বলে আখ্যায়িত করেছেন। ফলশ্রুতিতে, উনি মন খারাপ করে ভারত উপমহাদেশ ত্যাগ করে নিজ জন্মভূমি মক্কা শরীফে চলে যান। 'যিনি মিলাদ-কিয়াম করবেন- উনি করুন- এতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই- কারণ, এটা মুস্তাহাব এবং মুস্তাহসান আমল। ' আর, কেউ পালন না করলেও সমস্যা নেই- কিন্তু, 'বাড়াবাড়ি' করা হয় কেন???... [মিলাদ-কিয়ামের কোন মাহফিলে উপস্থিত হলে কোন ব্যক্তি এটা পালনের অভ্যাস না থাকলেও দাঁড়ানোটা আদব; না দাঁড়ালে সেটা বেয়াদবির শামিল। যে কোন বিবেকবান ব্যক্তিই এটা উপলব্ধি করতে সক্ষম। ]
অতএব, 'আন্দোলনের জন্য এটা কস্মিনকালেও কোন টপিক হতে পারে না'; বরং, 'সুদ, ঘুষ, বেপর্দা, দুর্নীতি, প্রতারণা, নাস্তিকতা, মানবতা বিরোধী কাজ- এগুলোর বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে হবে। ' 'মুস্তাহাব কোন বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করা মোটেও সমীচীন নয়।। '
তাই, চলুন, কোন প্রকার বাড়াবাড়ি না করে আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্তর্ভুক্ত সকল মুসলমান কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একতাবদ্ধ হয়ে সমাজে অবস্থান করি। পরস্পরের সুখে-দুঃখে পাশে থেকে একে-অন্যকে সাহায্য করি।। "
***
Read More

Friday, May 3, 2019

// //

মজযূবের বহুরূপ

 যে সকল বুযুর্গ সৃষ্টি সম্পর্কিত খেদমতে নিয়োজিত আছেন তারা রয়েছেন গোপনভাবে। তাঁদের শান হলো হযরত খিজির (আঃ) –এর মতো। তাদের খোঁজ পাওয়া বড় মুশকিল। তারা গোয়েন্দার মতো গোপনে থাকেন। এই জন্যে তাদেরকে তালাশ করা বৃথা। 

Read More

Monday, December 17, 2018

// // Leave a Comment

ঋণ

 বর্ণিত আছে, হযরত মোহাম্মদ ইবনে আসলাম তূসী (রহঃ) অনেক সময় টাকা কর্জ করিয়া ফকির-দরবেশদিগকে বিলাইয়া দিতেন। একবার একজন ইহুদী মহাজন আসিয়া বলিল, “হুযুর, আমি যে আপনার নিকট কিছু পাওনা ছিলাম, এখন তাহা পরিশোধ করুন। ” তুসী উত্তরে বলিলেন, “এখন আমার নিকট তো কিছুই নাই। ” অল্পক্ষণ পূর্বে তিনি একটি কলম কাটিয়াছিলেন, উহার কর্তিত টুকরা সেখানে পড়িয়া ছিল;
Read More

Monday, November 26, 2018

// // 1 comment

হজরত ইমাম মাহ্‌দী ও ঈসা (আ:)-এর শুভ আগমন

***হজরত ইমাম মাহ্দী ও ঈসা (আ:)-এর শুভ আগমন কবে হতে পারে***

- লিখেছেন ডক্টর মুহাম্মাদ রুহুল আমিন।
বর্তমান পৃথিবী যুদ্ধ-বিগ্রহ, দূর্নীতি, হিংসা হানাহানিতে ভরে গেছে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় আজ চরম পর্যায়ে চলে গেছে। সিরিয়ায় বর্তমানে যে যুদ্ধ চলছে, এই যুদ্ধ বন্ধ করার মত কোন শক্তি পৃথিবীতে নাই। এই যুদ্ধে পৃথিবীর ৮০টি রাষ্ট্র যুক্ত হবে এবং সর্বশেষ এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হবে। হাদিস অনুযায়ী একমাত্র হজরত ইমাম মাহদী (আঃ)-ই পৃথিবীতে মহাশান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তাই ইমাম মাহদী আগমনের ঘটনাটি বর্তমান পৃথিবীর মানুষের জন্য একটি বিরাট ঘটনা। আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে আমরা বিস্তর গবেষণার মাধ্যমে ইমাম মাহদীর আগমনের বছরটি খুঁজে পেয়েছি। এজন্য আল্লাহ তায়ালার অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি। আখেরী জামানার এই সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনাটি, আল্লাহর হাবীব রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর বংশধরের মধ্য হতে হজরত ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর শুভ আগমনের সেই বহুল প্রতীক্ষিত বছরটি আল্লাহ্ তায়ালার অশেষ রহমতে আমরা আবিষ্কার করে সারা পৃথিবীর মানুষের কল্যাণের জন্য জানিয়ে দিলাম যাতে করে মানুষ সতর্কতা অবলম্বন ও প্রস্তুতি নিতে পারে, তা না হলে বর্তমান পৃথিবীর আনন্দ উল্লাসে গা ভাসিয়ে দিলে দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে জীবন শেষ হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। এখন সামনে কি কি ঘটনা ঘটবে, দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে মানুষ কিভাবে ঈমান হারাবে, ইমাম মাহদী ও ঈসা (আঃ)-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিভাবে পৃথিবীতে মহা শান্তি ফিরে আসবে, তা উল্লেখ করা হলঃ

নীচের ৫টি হাদীসে উল্লেখ আছে যে, যে বছর রমজানে সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণ হবে, সেই বছরই ইমাম মাহ্দীর আর্বিভাব হবে। হাদীসে এটাও উল্লেখ আছে যে, মহাবিশ্বের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত এরকম চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের ঘটনা মাত্র একটি বছরেই ঘটবে। হাদীসগুলো এইঃ (১) ‘আল বুরহান ফি আলামাতিল মাহদি’ গ্রন্থের ৩৮ পৃষ্ঠায় আল্লামা মুত্তাকি (রঃ) একটি হাদিস উদ্ধৃত করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “যে বছর রমজান মাসের প্রথম দিকে সূর্যগ্রহণএবং রমজান মাসের শেষের দিকে চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে।” (২) ‘আল কাওলুল মুখতাছার’ গ্রন্থের ৫৩ পৃষ্ঠায় একটি হাদীস উল্লেখ রয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “যে বছর রমজান মাসে দুটি গ্রহণের ঘটনা অনুষ্ঠিত হবে, সেই বছরই ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে।” (৩) ইমামুল আকবারআলী বিন ওমর আল দারাকুতনির ‘সুনানে দারাকুতনি’ গ্রন্থে একটি হাদিস সঙ্কলিত হয়েছে, মোহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে আল হানাফিয়্যাহ (রঃ) বলেছেন, সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আবির্ভাবের দুটি নিদর্শন রয়েছে, যা আকাশমন্ডল ও ভূমন্ডলসৃষ্টির পর থেকে কখনো দৃষ্টিগোচর হয়নি, নিদর্শন দুটি হলোঃ যে বছর চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ রমজান মাসেই ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহ্দীর আবির্ভাব হবে।” (৪) ইমাম রব্বানি মুজাদ্দেদী আলফেসানী (রহঃ)-এর ‘মাকতুবাতে রাব্বানী’ (রাব্বানির প্রত্রাবলী)-র ৩৮০ নম্বর পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, “যে বছর রমজান মাসের প্রথমদিকে সূর্যগ্রহণ ঘটবেএবং রমজান মাসের ১৪ তারিখে চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে।” (৫) ইমাম কুরতুবী (রঃ) রচিত কিতাব ‘মুখতাছার তাজকিয়াহ্’ গ্রন্থের ৪৪০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদী (আঃ)-এর আগমনের পূর্বে দুটি গ্রহণ রমজান মাসেই ঘটবে। (৬) নুয়ায়েম ইবনে হাম্মাদ (রঃ) রচিত ‘কিতাবুল ফিতান’ গ্রন্থে সতর্কতামূলক বাণী উল্লেখ করা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা যখন রমজান মাসে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা প্রত্যক্ষ করবে, তখন এক বছরের খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে রাখবে।”

উপর্যুক্ত হাদীসগুলোতে বলা হয়েছে, যে বছর রমজান মাসে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ হবে সেই বছরই ইমাম মাহাদীর আগমন ঘটবে। সেই বছরটা যে কবে হবে তা আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে আমরা দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে খুঁজে বের করতে পেরেছি। আখেরী জামানার সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনাটি, আল্লাহর হাবীব রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর বংশধরের মধ্য হতে হজরত ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর শুভ আগমনের বছরটি আল্লাহ্ তায়ালা সারা পৃথিবীর মানুষকে জানাতে চান। এজন্য আল্লাহ তায়ালার অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি।

এই সালটা আমি কিভাবে বের করেছি সেটা নীচে বর্ণনা করা হলোঃ (১) প্রথমে প্রতি বছর রমজান কোন তারিখে শুরু হবে সেটা বের করেছি। যেমন ২০১৯ সালের রমজান কত তারিখে শুরু হবে, ২০২০ সালে কত তারিখে, ২০২১ সালে কত তারিখে ইত্যাদি। এই ভাবে ২০৫০ সাল পর্যন্ত একটি লিস্ট তৈরী করেছি। (২) প্রতি বছর চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহন কত তারিখে হবে সেটা বের করার জন্য নাসা-এর ওয়েবসাইট ব্যবহার করেছি যেখানে আগামী ১০০ বছরে কোন বছর কত তারিখে চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহন হবে-তার ডাটা টেবিল আকারে উল্লেখ আছে। “নাসা” হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এই নাসা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে বড় বড় সরকারী প্রজেক্টের মাধ্যমে নির্ভূলভাবে গবেষণা করে বলতে পারে যে, প্রতি বছর কোন্ তারিখে, কত মিনিটে ও কত সেকেন্ডে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ হবে।
[ https://eclipse.gsfc.nasa.gov/SEdecade/SEdecade2021.html
https://eclipse.gsfc.nasa.gov/LEdecade/LEdecade2021.html
https://www.islamicfinder.org/islamic-calendar/2026/February/?type=Gregorian
https://www.islamicfinder.org/islamic-calendar/2026/March/?type=Gregorian ]
(*চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে আরবী তারিখ নির্ধারিত হয়। তাই, সামনের হিজরী বছরগুলোর সম্ভাব্য দিন-তারিখ ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।)
(৩) এরপর রমজান মাসের তালিকা এবং চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহনের তালিকা পাশাপাশি রেখে দেখা গেল যে, ২০২৬ সালে যে তারিখে রমজান শুরু হবে সেই তারিখে সূর্যগ্রহন হবে এবং ঐ বছর রজমানের ১৫ তারিখে চন্দ্রগ্রহন হবে। ২০২৬ সালে রমজান শুরু হবে ১৮ই ফেব্রুয়ারী এবং নাসার হিসাব অনুযায়ী ২০২৬ সালে ১৭ই ফেব্রুয়ারী সূর্যগ্রহণ হবে। ঐ বছর রমযানের ১৫ তারিখ পড়ে ৩রা মার্চ। আর নাসার হিসাব অনুযায়ী চন্দ্রগ্রহণ হবে ৩রা মার্চ। অর্থাৎ হাদিস ও নাসার তথ্য অনুযায়ী ২০২৬ সালে ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর আবির্ভাবের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ইমাম মাহ্দী সঠিকভাবে কবে আসবেন-এটা আল্লাহ্পাক ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। তবে হাদীসে যে ইঙ্গিতটা উল্লেখ করা আছে, সেই হিসাবে ২০২৬ সালে ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর আবির্ভাবের সম্ভাবনা কতটুকু সেটাই উল্লেখ করেছি মাত্র। সমস্ত জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালা।
নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, দাজ্জালের আবির্ভাবের পূর্বে তিনটি দুর্ভিক্ষের বৎসর আসবে। উহাতে মানুষকে দুঃসহ অনাহার ও অনশন ভোগ করতে হবে। প্রথম বৎসর আল্লাহর আদেশে এক তৃতীয়াংশ বৃষ্টির বর্ষণ এবং পৃথিবী এক তৃতীয়াংশ শস্যাদির উৎপাদন বন্ধ করে দিবে। দ্বিতীয় বৎসর দুই তৃতীয়াংশ বৃষ্টির বর্ষন কমে যাবে ও উৎপাদন দুই তৃতীয়াংশ কম হবে। তৃতীয় বৎসর আল্লাহর আদেশে আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিবে। উহা হতে এক বিন্দু বৃষ্টিও বর্ষিত হবে না। সেই বৎসর আল্লাহর আদেশে পৃথিবী শস্যাদির উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিবে। উহা হতে কোনো সবুজ উদ্ভিদই উৎপন্ন হবে না। ফলে আল্লাহ যে পশুকে (জীবিত রাখতে) চাইবেন, তা ব্যতীত সকল তৃণভোজী পশুই ধ্বংস হয়ে যাবে।

উপরের হাদীস অনুযায়ী, ২০২৬ সালে যদি ইমাম মাহদীর আবির্ভাব ঘটে, তবে প্রক্রিয়াটা শুরু হবে আরো তিন বছর আগে থেকে অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে। কারণ, ২০২৩ সালে আকাশ হতে বৃষ্টিপাত তিনভাগের একভাগ কমে যাবে। ২০২৪ সালে বৃষ্টিপাত তিনভাগের দুইভাগ কমে যাবে। ফলে পৃথিবীতে ফসল উৎপাদন কম হবে। মানুষ এবং অন্যান্য জীবজন্তু ব্যাপকহারে মারা যেতে থাকবে। ২০২৫ সালে হাদীস অনুযায়ী কোন বৃষ্টিপাত হবে না। [দাজ্জাল আসার আগের তিন বছর এরকমই অবস্থা থাকবে; ইনশাআল্লাহ, হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম ২০২৬ সালে আসলে এর এক বছর পর ২০২৭-এ দাজ্জাল প্রকাশিত হবে। তাহলে, আসলে বৃষ্টিপাতবিহীন বছরটা হয় ২০২৬-ই। ২০২৫- তিন ভাগের দুই ভাগ কম এবং ২০২৪- তিন ভাগের এক ভাগ কম- আল্লাহ পাক ইচ্ছে করলে, ইনশাআল্লাহ।] [আর, দাজ্জাল আগমনের দশ বছর পর পশ্চিম দিকে সূর্যোদয় হবে, ইনশাআল্লাহু তা'আলা। -'কিতাবুল ফিতান' দ্রষ্টব্য।]

ফলে মানুষ এবং জীবজন্তু কঠিন অবস্থায় মধ্যে পড়ে যাবে। সেই বছরই দাজ্জালের লোহার শিকল খুলে দেয়া হবে এবং সে সারা পৃথিবীতে বিচরণ করবে এবং মানুষের সামনে এসে ঈমান হরণ করে নিবে। যেহেতু পর পর তিন বছর অনাবৃষ্টির ফলে পৃথিবীর মানুষ ও জীবজন্তু চরম খাদ্যভাবে পড়ে যাবে। তাই হাদীসে খাদ্য সঞ্চয় করে রাখার কথা বলা হয়েছে। মানুষ খাদ্য ও পানির অভাবে যখন ত্রাহী ত্রাহী অবস্থা তখন দাজ্জাল তার বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে এবং খাদ্যের ভান্ডার নিয়ে সুমধুর সুরে গান করতে করতে বিভিন্ন শহরে বন্দরে যাবে। গান পাগলা মানুষ মধুর বাদ্যযন্ত্র শুনে বলতে থাকবে, এই সুমধুর আওয়াজ কোথা থেকে আসছে। বিভ্রান্ত মানুষগুলো দলে দলে দাজ্জালের সামনে এসে হাজির হবে। দাজ্জালর ক্ষুধার্ত মানুষগুলোকে খাদ্য ও পানি সরবরাহ করবে, মানুষ খাদ্য ও পানি পান করে তৃপ্ত হবে। দাজ্জাল তখন বলবে, আমি তোমাদেরকে খাদ্য ও পানি দান করেছি ও শান্তি দিয়েছি, আমি কি তোমাদের প্রভু নহি? বিভ্রান্ত মানুষ তখন সমস্বরে বলবে, হ্যাঁ, তুমিই তো আমাদের প্রভু, তুমি না আসলে আমরা এ অবস্থা হতে বাঁচতে পারতাম না। এভাবে তারা দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে ঈমান হারাবে।

সারা পৃথিবীতে যখন দাজ্জালের ফেতনা চলতে থাকবে এবং দাজ্জালের ফেতনায় পড়ে মানুষ ঈমান হারিয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হবে। এইভাবে পৃথিবীর তিন ভাগের দুইভাগ মানুষ মারা যাবে। দুইভাবে মানুষ মারা যাবে। একটা হল Red Death অন্যটা হল White Death. Red Death অর্থাৎ যুদ্ধবিগ্রহের মাধ্যমে রক্তপাতের ফলে মানুষ মারা যাবে। আর, White Death হল বিভিন্ন ধরনের মহামারীতে ব্যাপক হারে মানুষ মারা যাবে। বর্তমানে চলছে ২০২৪ সাল। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী এটা হচ্ছে আখেরী জামানা অর্থাৎ শেষ জামানা। এখন যতই বছর যাবে ততই পৃথিবীর মানুষের অবস্থা খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাবে। এই জমানার শেষের দিকে ভয়ংকর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে। এটা হবে Red Death.
উপরের হাদীস থেকে জানা যায় যে, এই যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ইমাম মাহ্দী আসবেন। দাজ্জাল বের হবে, দাজ্জাল সারা পৃথিবী ব্যাপী ফিতনা সৃষ্টি করবে। দাজ্জাল কয়েক বছর অবস্থান করবে। পৃথিবীতে দেশে দেশে যুদ্ধবিগ্রহ চলতে থাকবে আর দাজ্জালের ফিতনা চলতে থাকবে। ফলে দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে এবং যুদ্ধবিগ্রহে কোটি কোটি মানুষ মারা যাবে। কেউ কারও নিয়ন্ত্রনে থাকবে না। কোন দেশ আরেক দেশের কথা শুনবে না। প্রত্যেক দেশ নিজ নিজ ক্ষমতা প্রদর্শন করবে।  যুদ্ধের শেষের দিকে পৃথিবীর মানুষ মরতে মরতে যখন তিনভাগের দুই ভাগ মানুষ মারা যাবে, তখন খাঁটি মুমিন বান্দারা আল্লাহতায়ালার কাছে আকুতি মিনতি করে কাঁদতে থাকবে আর বলতে থাকবে, হায়! হায়! আমাদের কি হবে? মুসলমানদের কি হবে? হে আল্লাহ! মুসলমানদের জন্য একজন নেতা পাঠান, যিনি আমাদেরকে এই কঠিন অবস্থা থেকে মুক্ত করতে পারবেন।

ঐ বছরের হজ্ব পড়বে শুক্রবার। শুক্রবারের হজ্বকে বলা হয় ‘হজ্বে আকবার’। ২০২৬ সালে ১০ই জিলহজ্ব পড়ে শুক্রবার। তারিখটা হল ১ মে, ২০২৬ সাল। ঐ দিন দুপুর বেলায় জুম্মার সময় কা’বা শরীফের মূলতাজাম ও হাজরে আসওয়াদ-এর মাঝখানে যখন ইমাম মাহ্দী কাবা ঘর তাওয়াফ করতে করতে আসবেন তখনই জিবরাইল (আঃ) ঘোষণা করবেন যে, ইনিই ইমাম মাহ্দী। তখন মুসলমানেরা দলে দলে ইমাম মাহ্দীর হাতে বাইয়াত গ্রহন করবেন।

হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) সৈয়দ বংশোদ্ভুত ও হযরত ফাতেমা জোহরা (রাঃ)-এর বংশধর হবেন। তাঁর প্রকৃত নাম হবে মুহাম্মাদ, পিতার নাম আবদুল্লাহ ও মাতার নাম আমিনা। তিনি 'ইলমে লাদুন্নি অর্থাৎ আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ বিদ্যা ও বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী হবেন, যা একমাত্র হযরত খাজা খিজির (আঃ) ও হযরত রাসুলে আকরাম (সাঃ) ব্যতীত অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। তাঁর মুখাকৃতি অবিকল হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর ন্যায়, গায়ের রং ফর্সা, আকৃতি লম্বা ও ছিপছিপে পাতলা ধরনের হবে। মুসলমানগণ খৃষ্টানদের সাথে যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর হতেই একজন উপযুক্ত নেতার সন্ধান করতে থাকবে, যাঁর নেতৃত্বে তারা যাতে পুনরায় তাদের হৃতরাজ্য পুনরুদ্ধার করতে পারে। রাসুলে আকরাম (সাঃ) ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন যে, যে বৎসর রমযান মাসে চন্দ্র গ্রহণ ও সুর্য গ্রহণ সংঘটিত হবে, ঠিক সেই বৎসরই ইমাম মাহদী (আঃ) আত্মপ্রকাশ করবেন। ইতিমধ্যে এক বৎসর রমযান মাসে ঠিক উভয় গ্রহণ সংঘটিত হলেই মুসলমানগণ হযরত ইমাম মাহদির খোঁজ করতে থাকবে। এই সুযোগে কতিপয় ভন্ড নিজেদেরকে ইমাম মাহদি বলে দাবী করবে। কিন্তু যিনি প্রকৃত ইমাম মাহদি, তাঁর উপরে লোকে খেলাফতের বিরাট দায়িত্ব চাপিয়ে দেবে, এই আশংকায় তিনি স্বীয় পরিচয় প্রদান করবেন না; বরং তিনি মদীনা হতে মক্কায় গিয়ে আত্মগোপন করে খানায়ে কা’বায় তাওয়াফে লিপ্ত থাকবেন। ঠিক এই সময় কতিপয় লোক তাঁকে প্রকৃত ইমাম মাহদি (আ.) বলে চিনতে পারবে ও তাঁর হাতে বাইয়াত হবে এবং তাঁকে খেলাফতের দায়িত্ব অর্পণ করবে। হযরত ইমাম মাহদির (আঃ) খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করার সংবাদ প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মদীনার সমস্ত সৈন্য সামন্ত ও নেতৃস্থানীয় লোকগণ মক্কায় তাঁর নিকট চলে আসবে এবং মক্কার অগনিত লোকও তাঁর নিকটে বাইয়াত হবে ও তাঁর সেনাদলে ভর্তি হবে।শাম, ইরাক ও ইয়ামানের অগণিত আওলীয়া ও আবদালগণ তাঁর পতাকা তলে সমবেত হবেন। হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) খানায়ে কা’বার নিম্নে প্রোথিত বিপুল পরিমাণ গুপ্তধন বের করে মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করে দেবেন। ওদিকে মুসলিম সেনা দলের সংঘবদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে খৃষ্টানগণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ হতে সৈন্য যোগাড় করে বিরাট সেনাবাহিনী গঠন করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে সিরিয়ায় সমবেত হবে। তাদের সেনা দলে সর্বমোট আশিটি পতাকা থাকবে এবং প্রত্যেক পতাকার অধীনে বারো হাজার করে সৈন্য থাকবে। হযরত ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে মুসলিম সেনাদল দামেস্কের নিকট পৌঁছলে খৃষ্টানদের সাথে তাদের একটা খন্ড যুদ্ধ হবে। এই সময় মুসলিম সেনাদল তিনদলে বিভক্ত হয়ে একদল খৃষ্টানদের ভয়ে রণক্ষেত্র পরিত্যাগ করে পালিয়ে যাবে, এক দল বিপুল বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে শহীদ হবে এবং অপর একদল আল্লাহর অসীম রহমতে জয়লাভ করবে। অতঃপর তিনি রাজ্যের শৃঙ্খলা বিধান, শান্তি স্থাপন ও সুষ্ঠুভাবে রাজ্য পরিচালনার দিকে মনোনিবেশ করবেন।-(তাফসীরে ইবনে কাসীর)

দাজ্জাল সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী কোনো স্থান হতে আবির্ভুত হবে। দাজ্জালের একটা ফিতনা এই হবে যে, সে কোনো গ্রাম্য লোককে বলবে, যদি আমি তোমার মৃত মাতা-পিতাকে পুনর্জীবিত করে দেই, তবে কি তুমি সাক্ষ্য দিবে যে, আমি তোমার প্রতিপালক প্রভূ? লোকটি বলবে, হাঁ! আমি এইরূপ সাক্ষ্য দিব! অতঃপর শয়তান উক্ত লোকটির মাতা ও পিতার রূপ ধরে তার সম্মুখে উপস্থিত হবে। তারা বলবে, ওহে বৎস! তাকে মানিয়া লও। তিনি তোমার প্রতিপালক প্রভূ। দাজ্জালের একটি ফিতনা হবে এই যে, কোনো গোত্র তাকে মিথ্যাবাদী বলে প্রত্যাখ্যান করলে তাদের গৃহপালিত পশু ধ্বংস হয়ে যাবে। কোনো গোত্রের লোকেরা তাকে সত্যবাদী বলে গ্রহণ করলে সে আকাশকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে আদেশ করবে আর আকাশ তার আদেশ মুতাবিক বৃষ্টি বর্ষণ করবে। সে পৃথিবীকে উদ্ভিদ ও ফসল উৎপাদন করতে আদেশ করবে আর পৃথিবী তার আদেশে উদ্ভিদ ও ফসল উৎপাদন করবে। তাদের গৃহপালিত পশুগুলি সেই দিনেই মোটা, তাজা, উচু, লম্বা ও বলিষ্ঠ হয়ে যাবে। উহাদের উদর ও পার্শ্বদ্বয় প্রশস্ত হয়ে যাবে এবং উহাদের দুগ্ধবর্তী পশু পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। অথচ ইতোপূর্বে উহারা কখনো এইরূপ ছিল না। দাজ্জালের একটি ফিতনা এই হবে যে, সে পৃথিবীর সর্বত্র বিচরণ করবে এবং পবিত্র মক্কা ও পবিত্র মদীনা ভিন্ন সমুদয় পৃথিবী সে অধিকার করে নিবে। পবিত্র মক্কা ও পবিত্র মদীনার যে পথ দিয়েই সে প্রবেশ করতে চেষ্টা করবে, সে পথেই ফেরেশতাগণ সুতীক্ষ্ম তরবারী দ্বারা তাকে প্রতিহত করবে। অতঃপর সে সাবখা সীমান্তে অবস্থিত ‘আয-যরীবুল আহমার’ নামক স্থানে আগমণ করবে। এই সময়ে পবিত্র মদীনায় তিনটি ভুমিকম্প সংঘটিত হবে। ইহাতে সকল মুনাফিক নর-নারী উহা হতে বের হয়ে গিয়ে দাজ্জালের সহিত মিলিত হবে। লৌহকারের হাপর যেরূপে লোহাকে মরিচামুক্ত করে দেয়, সেইরূপে মদীনা তখন অপবিত্র আত্মা হতে নিজেকে মুক্ত ও পবিত্র করে ফেলবে। এই যুগটি ‘নাজাতের যুগ’ নামে অভিহিত হবে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
হযরত ইমাম মাহদীর (আঃ) আবির্ভাবের পর হতে এই সময় পর্যন্ত সাত বৎসর অতীত হবে। এই সময় একটা সংবাদ প্রচারিত হবে যে, দাজ্জালের আবির্ভাব হয়েছে এবং তারা মুসলমানদের উপরে ভীষণ অত্যাচার করছে। দাজ্জালের সেনাবাহিনী যখন মুসলমানদের উপরে অসহনীয় অত্যাচার ও নির্যাতন করতে থাকবে, সে সময় হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) দামেস্ক অবস্থান করবেন। এই সময় একদা দামেস্কের জুমু'আর মসজিদে মুয়াজ্জিন আছরের নামাযের আযান দিলে মুসল্লীগণ নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে। ঠিক এমন সময় দু’জন ফেরেশতার কাঁধে ভর করে হযরত ঈসা (আঃ) মসজিদের পুর্বদিকের মিনারের উপরে অবতরণ করবেন এবং সেখান থেকে তিনি একটা সিঁড়ি দেয়ার জন্য মুসল্লীদেরকে আহ্বান করবেন। মুসল্লীগণ সিঁড়ি দিলে তিনি নিচে নেমে এসে হযরত ইমাম মাহদীর (আঃ) সাথে মোসাফাহ করবেন। এরপর ইমাম মাহদী তাকে নামাযের ইমামতি করতে অনুরোধ করবেন, কিন্তু হযরত ঈসা (আঃ) তাতে অসম্মতি জানিয়ে বলবেন, না, আমার জামানায় জামা'আতে নামাজ পড়ার বিধান ছিল না, আমি কোন দিন কোন জামা'আতের ইমামতি করিনি। একমাত্র দ্বীনে মুহাম্মাদি (সাঃ) -তেই জামা'আতে নামাজ পড়ার ও জামা'আতে ইমামতি করার বিধান আছে, সুতরাং আপনিই ইমামতী করুন। অতঃপর হযরত ইমাম মাহদী (আঃ)-ই ইমামতী করবেন এবং হযরত ঈসা (আঃ) তাঁর পিছনে মোক্তাদী হয়ে আছরের নামায পড়বেন। তারপর ইমাম মাহদী (আঃ) দাজ্জালের আবির্ভাব ও মুসলমানদের উপর তার অমানুষিক অত্যাচার সম্বন্ধে আলাপ আলোচনা করবেন। নামায শেষ হবার পর হযরত ঈসা (আঃ) বলবেন, তোমরা দরওয়াজা খোলো। দরওয়াজা খোলা হবে। দেখা যাবে, উহার বিপরীত দিকে দাজ্জাল অবস্থান করছে। তার সহিত সত্তর হাযার ইহুদী রয়েছে। তাদের প্রত্যেকের নিকট তরবারি ও তাজ রয়েছে। হযরত ঈসা (আঃ) দাজ্জালের দিকে তাকাতেই গলে যেতে থাকবে, যেমন গলে যায় পানির মধ্যে লবণ। সে পালাতে চেষ্টা করবে। কিন্তু হযরত ঈসা (আঃ) তাকে বলবেন, তোমাকে আমি নিশ্চয় একটি আঘাত করব। উহা হতে তুমি কিছুতেই রেহাই পাবে না। এদিকে হযরত ঈসা (আঃ) দাজ্জালকে হত্যা করতে অগ্রসর হবেন আর অপর দিকে মুসলিম সেনাগন দাজ্জালের দলবলকে আক্রমন করবে। পাপীষ্ঠ দাজ্জাল হযরত ঈসা (আঃ)-কে দেখেই উর্ধ্বশ্বাসে দৌঁড়ে পালাতে চেষ্টা করবে, কিন্তু হযরত ঈসা (আঃ)-এর হাত হতে সে নিষ্কৃতি পাবে না। একদিকে মুসলিম সেনাগণ দাজ্জালের সহচরদেরকে পঙ্গপালের ন্যায় হত্যা করতে থাকবে। উপায়ন্তর না দেখে তারা পাহাড় পর্বত, বন জঙ্গলে আশ্রয় গ্রহণ করবে, কিন্তু মুসলমান সৈন্যদের হাত হতে তারা কেউই রক্ষা পাবে না। তিনি পুর্বদিকে অবস্থিত ‘লুদ’ প্রান্তে তাকে পাকড়াও করে হত্যা করবেন। এভাবে আল্লাহ তাআলা ইহুদীদিগকে পরাজিত করবেন। প্রস্তর, বৃক্ষ, প্রাচীর, চতুষ্পদ প্রাণী ইত্যাদি যে কোনো বস্তুর আড়ালেই ইহুদীগণ আশ্রয় লউক, আল্লাহ তাআলা সেইদিন সেইগুলিকে ভাষা দিবেন। উহারা ডেকে বলবে, ওহে আল্লাহর মুসলিম বান্দাগণ। এই একজন ইহুদী। আসো উহাকে হত্যা করো। তবে বাবলা বৃক্ষ তাদেরই বৃক্ষ। উহা মুখ খুলবে না।-(তাফসীরে ইবনে কাসীর)

দাজ্জালের মৃত্যুর পর হযরত ঈসা (আঃ) ও হযরত ইমাম মাহদী (আঃ) একত্রে দাজ্জালের অত্যাচারিত দেশসমূহে ভ্রমন করে সর্বত্র শান্তি স্থাপন ও শাসন শৃংখলা বিধান করবেন। তাঁরা উভয়েই সেসব দেশের ইহুদী খৃষ্টানদেরকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা গ্রহণের জন্য আহ্বান করবেন। যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করবে না, তাদেরকে হত্যা করা হবে। ফলে তখন দুনিয়ার বুকে আর একজন অমুসলমানও থাকবে না। এর কিছুকাল পরে উনপঞ্চাশ বছর বয়সে ইমাম মাহদী (আঃ) ইন্তেকাল করবেন ও হযরত ঈসা (আঃ) রাজ্য পরিচালনা করতে থাকবেন। দেশের জনসাধারণের মধ্যে আবার পরম সুখ-শান্তি ফিরে আসবে। হযরত ঈসা (আঃ) আসমান হতে অবতরণের পর মোট চল্লিশ বৎসর দুনিয়াতে অবস্থান করবেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বিবাহ করবেন এবং তাঁর সন্তান-সন্তুতি জন্মগ্রহণ করবে। হযরত ঈসা (আঃ) পূর্বে যখন দুনিয়ায় এসেছিলেন তখন তিনি বিবাহ করেননি, এমন কি বসবাস করার জন্য তাঁর নিজস্ব কোন ঘর-বাড়ী পর্যন্ত ছিল না। দ্বিতীয়বার দুনিয়ায় আগমনের চল্লিশ বৎসর পর তিনি মদীনায় ইন্তেকাল করবেন এবং হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পবিত্র রওজা মোবারকের নিকট তাঁকে সমাহিত করা হবে।-(তাফসীরে ইবনে কাসীর)

আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরীফে সূরা কাহাফ নাযিল করেছেন। কাহাফ আরবী শব্দ। এর অর্থ গর্ত। সাত জন যুবক এক গর্তে ঘুমিয়ে ছিল ৩০৯ বছর। এই সাতজন যুবকের কবর সিরিয়া এবং বেথেলহামের মাঝে এক জায়গায় আছে। ঈসা (আঃ) যখন পৃথিবীতে আগমন করবেন, তখন অলৌকিকভাবে এই সাতজন যুবক জীবিত হবেন। এই কবরের পাশে একটি গাছ সেই যুগ থেকে এখনও পর্যন্ত জীবিত আছে। হযরত ঈসা (আঃ)-এর বিবাহ অনুষ্ঠান এই গাছের নীচে হবে এবং বেহেশত থেকে এই বিবাহ অনুষ্ঠানের খাবার আসবে। আখেরী জামানার ঘটনার সাথে এই সূরার সম্পর্ক আছে বিধায় সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত মুখস্ত রাখলে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকা যায়। হযরত ইবনে আব্বাস ও আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি জুমআর দিন অথবা তার রাতে সূরা কাহফ পাঠ করে, তাকে তার পড়ার স্থান থেকে মক্কা শরীফ পর্যন্ত নূর দান করা হয় এবং দ্বিতীয় জুমআ ও আরও তিন দিনের মাগফেরাত করা হয়। সত্তর হাজার ফেরেস্তা সকাল পর্যন্ত তার প্রতি রহমত প্রেরণ করে। সে ব্যথা, পেটের ফোড়া, বাত, কুষ্ঠ এবং দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকে। অন্য রেওয়ায়েতে আছে, সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত মুখস্ত রাখলে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকা যায়।-(তাফসীরে ইবনে-কাসীর)
[*আরবি তারিখ চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয়।]
***
(ঈষৎ সম্পাদিত)
কার্টেসীঃ ডক্টর মুহাম্মাদ রুহুল আমিন।
দৈনিক ইনকিলাব।
[ https://www.dailyinqilab.com/article/157220/%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%88%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%28%E0%A6%86%29-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%AD-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A6%A8/
https://www.dailyinqilab.com/article/158654/%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%88%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%28%E0%A6%86%29-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%AD-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A6%A8
https://www.dailyinqilab.com/article/159973/%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%88%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%28%E0%A6%86%E0%A6%83%29-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%AD-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87
https://www.dailyinqilab.com/article/161348/%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%88%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%28%E0%A6%86%E0%A6%83%29-%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%AD-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A6%A8


Read More

Thursday, June 14, 2018

// // Leave a Comment

রুটি চোরের স্বীকারোক্তি

 এক ব্যক্তি হযরত ঈসা (আঃ) এর খেদমতে সফরে রওয়ানা হলো। ঈসা (আঃ) এর সঙ্গে তিনটি রুটি ছিল। এক নদীর তীরে পৌঁছে তিনি দুইটি রুটি আহার করলেন এবং পানি পান করার জন্যে নদীতে গেলেন। ফিরে এসে দেখেন অবশিষ্ট একটি রুটি নাই।
তিনি সেই লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “রুটি কে নিয়েছে?”
লোকটি বললো, “আমি জানিনা। ”
তিনি লোকটিকে নিয়ে আবার রওয়ানা হলেন। রাস্তা চলতে চলতে যখন ক্ষুধার উদ্রেক হলো তখন তিনি দূরে একটি হরিণী দেখতে পেলেন।
Read More
// // Leave a Comment

উটের বোঝা

 কথিত আছে, একবার হযরত বায়েযীদ বোস্তামী (রহঃ) হজ্জ্বে গমন কালে তাঁহার ও তাঁহার মুরীদগণের সমস্ত মালপত্র একটি উট বোঝাই করিয়া যাইতেছিলেন।  ইহা দেখিয়া জনৈক পথিক বলিল, ‘এই নিরীহ উটটির উপর বড় ভারী বোঝা চাপান হইয়াছে, ইহা অত্যন্ত যুলুম করা হইতেছে। ’
হযরত বায়েযীদ (রহঃ) বলিলেন, “এসমস্ত বোঝা উটটি বহন করিতেছে না।
Read More