Wednesday, April 11, 2018

// // Leave a Comment

ইঞ্জিল নয় কদু



[এখানে প্রণিধানযোগ্য একটা বিষয়ঃ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যে আসমানী কিতাব পবিত্র কোরআন শরীফ, পবিত্র ইঞ্জীল শরীফ, পবিত্র তাওরাত শরীফ, পবিত্র যাবূর শরীফ -মোট ৪ টি বড় আসমানী কিতাব এবং আরও ১০০টি পবিত্র সহীফা শরীফ নাযিল করেছিলেন- সেগুলোর মূল প্রতিলিপি কখনও পরিবর্তিত হয় না; পথভ্রষ্ট মানুষেরাই অন্য কথাকে এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করে মিথ্যার বেড়াজালে আবদ্ধ হয়েছে। 'আল্লাহর বাণী কখনও পরিবর্তিত হয় না।' এবং আল্লাহ্ তা'আলাই পবিত্র কোরআন শরীফের শুদ্ধতা তথা সংশ্লিষ্ট সবকিছুর হেফাজত করছেন।
আল কোরআনুল কারীম নাযিল হবার পর পূর্ববর্তী সকল আসমানী কিতাবের বিধান রহিত হয়ে গিয়েছে; পবিত্র কোরআন শরীফের বিধান-ই সমগ্র বিশ্বজগতসমূহের অধিবাসীদের জন্য বর্তমানে কার্যকর।]
"এক খ্রিষ্টান বক্তা দেওবন্দে আসতো।  আমি তখন সেই মাদ্রাসায় পড়তাম।  এক দিন সে এসে মাদ্রাসার কাছে বক্তৃতা শুরু করে দিল।  মহল্লার লোক এবং মাদ্রাসার ছাত্র সমবেত হয়ে বেশ বড় একটা সমাবেশ সৃষ্টি করলো।
   খ্রিষ্টান লোকটি দাঁড়িয়ে হাতে সুন্দর হরফে ‘ইঞ্জিল’ খচিত একটি বই নিয়ে সমবেত লোকদেরকে লক্ষ্য করে জিজ্ঞাসা করলো, ‘আমার হাতে এটা কী?’

   তার উদ্দেশ্য ছিল এই যে, মুসলমানরা যদি জওয়াব দেয় ‘এটা ইঞ্জিল’ তাহলে তাদের এই স্বীকারোক্তি দ্বারা প্রমাণ হবে যে এটা ইঞ্জিল।  আর, ইঞ্জিলকে যেহেতু মুসলমানরা আল্লাহর কিতাব হিসেবে বিশ্বাস করে সুতরাং এই বইয়ের হুকুমকেও তারা মানতে বাধ্য হবে। 

   কিন্তু, মুসলমানদের এরূপ জওয়াবের দ্বারা বিতর্কের সৃষ্টি হবে।  মুসলমানেরা বলবে, “এটা ইঞ্জিল হলেও এর হুকুম রহিত (মানসুখ) হয়ে গেছে। ” আর, সে বলবে, ‘না, রহিত হয়নি। ’ সুতরাং, তার প্রশ্ন ‘এটা কী?’ – এর জওয়াবে ‘ইঞ্জিল’ বললে একটা স্থায়ী বিতর্কের সৃষ্টি হবে; যা কখনও শেষ হবে না।

   সুতরাং, কেউ কোন জওয়াব দেয়নি।

   এমন সময় মাদ্রাসা কমিটির মেম্বার হাকিম মুশতাক আহমদ এসে গেলেন।  তিনি ছাত্রদেরকে বললেন, “সরে যাও, এর জওয়াব দেওয়া তোমাদের কাজ নয়।  আমি জওয়াব দিচ্ছি। ”

   তিনি বললেন, “তোমার প্রশ্নের জওয়াব আমি দিব।  প্রশ্ন যা করতে চাও, কর। ”

 সে খুব উৎসাহের সাথে সেই বইটি হাতে নিয়ে বললো, “বলুন, আমার হাতে এটা কী?”

তিনি বললেন, “এটা কদু। ”

সে খুব অসন্তুষ্ট হয়ে বললো, “তুমি বড় বেয়াদব দেখছি!”

তিনি বললেন, “আমরা যা বুঝতে পেরেছি তাই বলেছি।  এতে আবার বেয়াদবীর কী হলো? অবশ্য যদি ব্যাখ্যা চাও, তবে একথার ব্যাখ্যা আমরা দিতে পারি।  পরিবর্তিত করার পর এটা আর আল্লাহর কিতাব নয় যে বেয়াদবী হবে।  কদু যেরূপ আল্লাহর কিতাব নয় এটাও সেরূপ আল্লাহর কিতাব (ইঞ্জিল) নয়।  কদু আর এটার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।  সুতরাং, এটাও একটা কদু।  কদুকে কদু বললে কোন বেয়াদবী হয়না। ”

                                -আল ইফাযাতুল ইয়াওমিয়্যাহ্‌।  [খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ১১৮]

***


0 Comments:

Post a Comment