Wednesday, April 11, 2018

// // Leave a Comment

জুতা সোজা করার বরকত


সরলতা মানুষকে জান্নাতের পথে নিয়ে যায়।  এরূপ সরলতা ও বিনয়ের এক ঘটনা মনে পড়ে গেছে।
 মাওলানা আবদুল কাইয়ুম সাহেব ভূপালে অবস্থান করতেন।  একবার সেই এলাকার নওয়াবের বেগম সাহেবা দ্বীনি প্রয়োজনে তারঁ সঙ্গে দেখা করতে হাজির হলেন। 
 প্রয়োজন শেষে যখন তিনি বিদায় হবেন তখন মাওলানা সাহেব বেগম সাহেবার জুতা সোজা করে তার সামনে এগিয়ে দিলেন।

 বেগম সাহেবা খুব লজ্জিত হলেন এবং আরজ করলেন, “আপনি দেখছি আমাকে গুনাহ্‌গার করলেন। ”

 মাওলানা সাহেব বললেন, “আপনাকে আমি বুযুর্গ ব্যক্তি ভেবেই এভাবে জুতাগুলি সোজা করে দিয়েছি। ”

 বেগম সাহেবা বললেন, “কিভাবে আমি বুযুর্গ হলাম?”

 মাওলানা বললেন, “আমি আপনার শহরে এতকাল যাবৎ (হিন্দু কুসংস্কার অনুযায়ী নাবালিকা অবস্থায়) বিধবা বিবাহের জন্যে উৎসাহ দিয়ে ওয়াজ করে যাচ্ছি; কিন্তু, আজ পর্যন্ত একটি বিধবারও বিয়ে হয়নি- এই হলো আমার বুযুর্গী।  এখন, আপনি একবার নিজের বুযুর্গী পরীক্ষা করে দেখুন।  শুধুমাত্র একটি সাধারণ নির্দেশ ঘোষণা করে দিন।  তারপর দেখুন, একটি বিধবাও বিবাহের বাকী থাকবে না।  তখন, আমার বুযুর্গী আপনার বুযুর্গীর সাথে তুলনা করবেন। ”

 বেগম সাহেবা ছিলেন বুদ্ধিমতী এবং দীনদার।  পরদিন সকালে তিনি দরবারে আসন গ্রহণ করেই নির্দেশ প্রচার করলেন যে, এই সময়-সীমার মধ্যে কোন সন্তানহীনা বিধবা বিবাহ না করে থাকতে পারবে না; অন্যথায় কঠোর শাস্তি হবে।

 অতঃপর, দেখা গেল মাত্র দুই-এক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্ত (সন্তানহীনা) বিধবার বিবাহ হয়ে গেল।

 মাওলানা সাহেবের কৌশল কিভাবে কার্যকার হলো দেখুন।  তাঁর সরলতা এই যে, তিনি জুতা সোজা করে দ্বিধা করলেন না।  ফলে, বেগম সাহেবার দ্বারা এত বড় একটা দ্বীনি খেদমত গ্রহণ করলেন যা অন্য কোনভাবে সম্ভব ছিল না।

                   -আল ইফাযাতুল ইয়াওমিয়্যাহ্‌।  (খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৫২)

***

0 Comments:

Post a Comment